Friday, September 22, 2023
Homeউপকারিতাগরুর দুধ খাবার উপকারিতা ও সঠিক সময়

গরুর দুধ খাবার উপকারিতা ও সঠিক সময়

আমরা প্রতিদিন যে সকল খাবার খেয়ে থাকি তার মধ্যে দুধের উপকারিতা সবচেয়ে বেশি এটি একটি স্বাস্থ্যকর এবং সহজলভ্য সুস্বাধু খাবার । গরুর দুধের মধ্যে অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে যে উপকারিতা গুলো আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকে অনেক উপকারিতা সম্বন্ধে জানি না।

উপকারিতা জানা না থাকলেও গরুর দুধ পছন্দ করেন না এমন লোক কম পাওয়া যাবে । তবে সবাই দুধ পছন্দ করলেও অনেকে আছেন যারা নিয়মিত নিয়ম মেনে প্রতিদিন গরুর দুধ খাই না।

আজ আমি আপনাদের সাথে গরুর দুধের উপকারিতা গুলো শেয়ার করতে যাচ্ছি যে উপকারিতাগুলো জানার পর আপনারা প্রতিদিন নিয়ম করে গরুর দুধ খাবার চেষ্টা করবেন।

চলুন তাহলে জেনে নিই গরুর দুধের মধ্যে য্ব সকল উপকারিতা রয়েছে সেই উপকারিতা গুলো কি কি

তবে এর আগে আমরা একনজরে দেখে নিব গরুর দুধের মধ্যে কি কি পুষ্টিকর গুনাগুন রয়েছে

গরুর দুধের পুষ্টিকর গুনাগুনঃ

গরুর দুধের মধ্যে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ্‌ , ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি টুয়েল,ভিটামিন b6 , নিয়াসিন, কোলেস্টরেল রাইবোফ্ল্যাভিন্‌ পানি আমিষ , কালসিয়াম্‌ , পটাশিয়াম , ফসফরাস ও প্রোটিন ।

এবার আমরা জেনে নিব গরুর দুধের উপকারিতাঃ

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলেঃ

গরুর দুধ আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে । গরুর দুধ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে আমাদেরকে নানা ধরনের রোগব্যাধি হাত থেকে রক্ষা করে ।
তাই প্রতিদিন যদি এক গ্লাস দুধ খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আমাদের শরীর নানা রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে ।

২। হজমের সমস্যা সমাধান করেঃ

অনেকের হজমের সমস্যা রয়েছে এবং এই সমস্যা থেকে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে । কিন্তু আমরা এই পাকস্থলীর সমস্যা সমাধান করার জন্য এবং আমাদের হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাকি ।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না আমাদের হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য যে সকল খাবার রয়েছে সেগুলোর মধ্যে গরুর দুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার যেটি খুব কম খরচে আমরা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে ।
তাই প্রতিদিন ১ গ্লাস দুধ পান করুন ।

৩। উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ

উচ্চ রক্তচাপের কারণে যে কোন সময় মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে । তাই প্রতিটি মানুষের উচিত নিজেদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা।

উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসকরা বলে থাকেন উচ্চ রক্তচাপ সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত । রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের অনেকগুলো উপায় রয়েছে তার মধ্যে প্রদান এবং অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে গরুর দুধ পান করা।

যদি প্রতিদিন দুপুরে খাবারের পরে অথবা বিকালে ১ গ্লাস গরুর দুধ খাওয়া যায় তাহলে অনেকগুলো উপকারের সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে

৪। চুলকে স্বাস্থ্য সুস্থ্য রাখেঃ

আমাদের চুলকে সুন্দর সুস্থ্য রাখার জন্য প্রয়োজন চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় আর দুধ হচ্ছে এমন একটি খাবার যেটি খেলে আমাদের চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পৌঁছাবে এর মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি এসিড এবং মেয়েটি আমাদের চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছাতে সাহায্য করে এবং চুলকে সুন্দর ও ঘন রাখতে অনেক বেশি কাজ করে তাই যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে এবং চুলের মধ্যে অনেক পরিমাণে খুশকি বেড়ে গিয়েছে তাদের উচিত প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাওয়া।

চুলকে ভালো রাখতে আপনারা প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাবার সাথে সাথে দুধের দুধের হেয়ার প্যাক তৈরি করে চুলের মধ্যে এপ্লাই করতে পারেন এতে করে বাহির থেকে ও চুলের পুষ্টির যোগান হবে

৫। মাংসপেশির ভালো গঠন করেঃ

মাংসপেশি ভালো না থাকলে একটি মানুষ খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়ে । তাই আমাদের সবার আমাদের মাংসপেশির গঠনের দিকে নজর রাখা উচিত ।

আর গরুর দুধ এমন একটি খাবার যেটি আমাদের শরীরের মাংসপেশি গঠনে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শরীরকে সুস্থ সবল এবং শক্তিশালী রাখার জন্য আমাদের দেহের মাংসপেশির প্রতি আমাদের যত্নবান হতে হবে ।

তাই মাংসপেশির গঠন ঠিক রাখার জন্য যে সকল খাবার খেয়ে থাকেন সে খাবারগুলোর মধ্যে অবশ্যই দুধকে রাখবেন । কারণ দুধের মধ্যে যে সকল উপকারী উপাদান রয়েছে তা শরীরের মাংসপেশি গঠন করে থাকে।

৬। দাঁত ও হাড়কে মজবুত বানায়ঃ

মজবুত করার জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত দরকারি একটি উপাদান আর দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যার কারণে প্রতিদিন দুধ খেলে আমাদের দাঁত ও হাড় মজবুত হয় । তাই নিজেদের দাঁত ও হারকে মজবুত রাখার জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা অত্যন্ত জরুরি ।

এটি আমাদের হাড়কে অনেক বেশি শক্ত করে তুলবে এবং আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক বেশি বৃদ্ধি করবে।
এছাড়াও যারা ক্যালসিয়ামের অভাবে দাঁত ও হাড়ের সমস্যা জনিত রোগে ভুগছেন তারা সেই রোগ থেকে মুক্তি পাবেন ।

৭। মানসিক চাপমুক্ত রাখবেঃ

মানসিক চাপ খুবই খারাপ একটি জিনিস যেটি আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় শরীরকে দুর্বল করে ফেলে । এমন কি মানুষকে নিঃস্ব করে পাগল পর্যন্ত করে ফেলেন ।

তাই আমাদের সবার উচিত সব সময় মানসিক চাপমুক্ত থাকা । আর গরুর দুধের এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেটি আমাদেরকে মানসিক চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করে । আমরা যদি প্রতিদিন এক গ্লাস গরুর দুধ খায় তাহলে আমাদের শরীর এবং মন মানসিক চাপমুক্ত থাকবে এবং এটি শরীর ও মনকে তাজা রেখে শরীরকে মানসিক চাপমুক্ত রাখবে।

৮। ত্বকের উজ্জলতা বাড়াবেঃ

গরুর দুধ আমাদের ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে অনেক বেশি সাহায্য করে । প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার সময় যদি এক গ্লাস গরুর দুধ পান করা যায় তাহলে এটি আমাদের শরীরের মেলানিন এর মাত্রা কে কমিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলবে ।
এছাড়াও গরুর দুধ যদি ত্বকে ব্যবহার করা যায় তাহলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গরুর দুধ দিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য নিচের ফেস প্যাক টি ব্যবহার করতে পারেন

উপাদানঃ

আধা কাপ – গরুর দুধ
১ চিমিটি – জাফরান
৪ চামচ – গোলাপের পাপড়ি গোড়া

তৈরি ও ব্যবহারঃ

১। সবার প্রথমে আধা কাপ গরুর দুধ নিয়ে এর মধ্যে এক চিমটে জাফরান কে ভিজিয়ে রাখতে হবে ১৫ মিনিট মত ।

২। এটি ভিজে যাবার পর এরসাথে ৪ চামচ গোলাপের পাপড়ি গোড়া এড করুন।

৩। এটি খুব ভালোভাবে মিশে যাবার পর এটি ত্বকের মধ্যে এপ্লাই করে 10 থেকে 15 মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

৪। 10 থেকে 15 মিনিট পর ত্বক পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ।

বন্ধুরা আপনারা যদি গরুর দুধ কে এভাবে ত্বকের মধ্যে এপ্লাই করেন তাহলে দেখতে পাবেন আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে এসেছে।

এছাড়া প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার সময় কটন প্যাড দুধের মধ্যে ভিজিয়ে দিয়ে যদি ত্বক পরিষ্কার করে নেওয়া যায় তাহলে ত্বকের পোড়া দাগ দূর হয়ে যায় ।

৯। হারনো শক্তি ফিরিয়ে আনেঃ

প্রতিদিনের কাজের ফলে আমাদেরকে বাহিরে যেতে হয় অথবা বাসায় যারা থাকেন তারা অনেক কাজের কারণে নিজেদের শক্তি হারান। যার কারণে আমাদের শরীর হতে প্রচুর পরিমাণে শক্তি ক্ষয় হয় ।

এর কারণে আমাদের শরীরে ক্লান্তি চলে আসছে এবং আমরা দুর্বলতা অনুভব করি । এসব দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অবসাদ দূর করার জন্য যদি এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়া যায় তাহলে নিমিষেই আমাদের শরীরের দুর্বলতা কেটে আমাদের শরীর সতেজ হয়ে উঠে ।

এর কারণ হচ্ছে দুধের মধ্যে থাকা ভিটামিন প্রোটিন ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। সেগুলো আমাদের শরীরের শক্তি যোগায় যার কারণে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় । তাই আপনাদের আমার পরামর্শ হবে আপনারা আপনাদের শরীরের শক্তি ফিরে পাবার জন্য এবং ক্লান্তি দূর করার জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খাবেন ।

১০। অনিদ্রার সমস্যা দূর করেঃ

যাদের অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ যাদের খুব ভালো ঘুম হয় না তাদের জন্য গরুর দুধ অনেক ভালো কাজ করে । এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ আপনাকে এনে দিতে পারে একটি প্রশান্তির ঘুম ।

বন্ধুরা আপনাদের যাদের রাতে খুব ভালো ঘুম হয় না তারা প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খাবেন। তাহলে আপনারা দেখতে পাবেন আপনাদের খুব ভাল একটি ঘুম হচ্ছে ।

১১। শরীর ফিট রাখেঃ

আমরা আমাদের শরীরকে ফিট রাখার জন্য নানান ব্যায়াম যেমন জগিং অথবা সকালবেলা হাঁটা, সাতার কাটা ইতাদি করে থাকি।
ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য এই শারীরিক ব্যায়াম গুলো জরুরি তবে ফিটনেসকে খুব ভালো রাখার জন্য এগুলোর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যকর দিক হচ্ছে খাবার গ্রহণ ।

আর স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে যে সকল খাবার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম আদর্শ খাবার হচ্ছে দুধ ।
প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খেতে পারলে ফিটনেস খুব ভালো থাকে । এছাড়াও এটি ফিটনেস ভালো রাখার সাথে সাথে শরীর ও মনকে সতেজ রাখে ।

তাই আমাদের সবার উচিত ফিটনেসকে খুব ভালো এবং সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস করে দুধ পান করা ।
আপনারা তো গরুর দুধের উপকারিতা গুলো জানলে । তবে আমি আপনাদেরকে গরুর দুধের উপকারিতা পাবার জন্য একটি সময় উল্লেখ করে দিচ্ছি সেটি হচ্ছে আপনারা প্রতিদিন রাতে ঘুমাবার আগে যদি এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান তাহলে আপনারা এই সমস্ত উপকারিতা পাবেন।

রাতে ঘুমাবার আগে যদি গরুর দুধ না খেতে পারেন তাহলে দিনের যেকোনো সময় আপনারা গরুর দুধ খেতে পারেন তাহলেও কিন্তু আপনারা গরুর দুধের এইসকল উপকারিতা গুলো পাবেন ।
তবে রাতে দুধ পান করলে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায় ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments