আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব অশ্বত্থ গাছের উপকারিতা নিয়ে। অশ্বত্থ গাছ কে আঞ্চলিক ভিত্তিতে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে। কিন্তু যেভাবে ডাকা হোক না কেন এর উপকারিতা এবং গুণাগুণ কিন্তু সব জায়গায় একই রকম।
আমরা আজ অশ্বত্থ গাছের বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করতে চলছি। অশ্বত্থ গাছ একটি ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে আমাদের সকলের নিকট পরিচিত এবং প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
হৃদপিন্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে অশ্বত্থ গাছের উপকারিতাঃ
অশ্বত্থ গাছের পাতা হৃদপিণ্ডকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম রাখতে সাহায্য করে। অশ্বত্থ গাছের পাতা পানিতে সিদ্ধ করে এরপর ঠান্ডা করে নিয়মিত পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং হৃদপিণ্ড কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে।
অশ্বত্থ গাছ স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করেঃ
অশ্বত্থ গাছের পাকা ফল কিন্তু স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। অথবা অনেকক্ষণ কাজ করে ক্লান্ত হয়ে গেলে আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো যখন নির্জীব হয়ে পড়ে, তখন কিন্তু অশ্বত্থ গাছের পাকা ফলের মধ্য দিয়ে নির্জীব হওয়া স্নায়ুকে উত্তেজিত করে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
এছাড়া ক্লান্তি নিরসন করে নিজেদের মনে একটা প্রশান্তি ভাব সৃষ্টি করা যায়। আর এই জন্য প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি অশ্বত্থ গাছের কাঁচা ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
চোখের এলার্জি সমস্যা সমাধানে অশ্বত্থ গাছের উপকারিতাঃ
যাদের চোখে এলার্জি রয়েছে, পানির সংস্পর্শে আসলে চোখ লাল হয়ে যায় বা অন্যকোন প্রসাধনী ইউজ করলে চোখ লাল হয়ে যায়, অথবা বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা কিন্তু অশ্বত্থ গাছের একেবারে কচি পাতা সিদ্ধ করে পানি ঠান্ডা করে চোখে দিতে পারে। এভাবে যদি নিয়মিত মুখ ধোয়ার অভ্যাস করতে পারে তাহলে আপনাদের চোখে যে সমস্যা রয়েছে সেটা কিন্তু চলে যাবে।
কৃমির উপদ্রব কমাতে অশ্বত্থ গাছের উপকারিতাঃ
কৃমির উপদ্রব যে কোন বয়সের জন্য ক্ষতিকারক। তাই কৃমির উপদ্রব কমিয়ে ফেলতে অশ্বত্থ গাছের চামড়া গুড়ো করে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা পান করলে অতিরিক্ত পেটের কৃমি মরে যায়। অর্থাৎ কৃমি দমন করতে অশ্বত্থ গাছের ছাল কিন্তু দারুণ ভাবে কার্যকরী।
পাইলসের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে অশ্বত্থ গাছের উপকারিতাঃ
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যাদের রয়েছে অথবা পাইলসের সমস্যা যাদের রয়েছে, তারা কিন্তু অশ্বত্থ গাছের মাধ্যমে খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারেন। পাশাপাশি পেট পরিষ্কার হয়ে যায়।
জয়েন্টে ব্যথা নিরসনে অশ্বত্থ গাছের উপকারিতাঃ
হাড়ের জয়েন্টে জয়েন্টে যাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ব্যাথা লক্ষ করা যায় অথবা একটু ভারী জিনিস নিলে শরীরের বিভিন্ন হাড়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা করে, তারা কিন্তু অশ্বত্থ গাছের কচি পাতা পানিতে সিদ্ধ করে সে পানি যদি আপনারা খেতে পারেন, তাহলে আপনাদের উল্লেখিত সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান পাবেন।
তাহলে বন্ধুরা, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন অশ্বত্থ গাছের কতগুলো উপকারিতা রয়েছে। তাই অশ্বত্থ গাছ যেমন আকারে বড় তার নিচে দাঁড়িয়ে আমরা ছায়া ও পায়, তার সাথে সাথে এর ফল, এর পাতা এবং এর ছাল ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।